নদীর পানিতে ঘোলা ঘূর্ণি, মানুষের চোখেও। ঘর বাড়ি ডুবে গেছে, ফসলের জমি ভেসে গেছে, কলা গাছের পাশে ভেসে যাচ্ছে মানুষের লাশ। সবাই ছুটছে একখণ্ড ডাঙার খোঁজে। নরক শুধু জ্বলন্ত হয় না, ডুবন্তও হয়। অষ্টআশি সনের বন্যায় মেঘনার পাড়ের মানুষগুলো তা নতুন করে বুঝেছিল। দুজন বাচাল মাঝি আর একটি নৌকা নিয়ে সেই নরকেই ভেসে বেড়াচ্ছে আমেরিকা প্রবাসী কাজল। বইপত্রে পড়া মিথ্যা গ্রাম পেরিয়ে সে চলে এসেছে বন্যায় ডুবে যাওয়া বাস্তব গ্রামে, যেখানে কৃষক হাসিমুখে হাল নিয়ে মাঠে যায় না, ছেলের লাশ ভাসায় পানিতে। যেখানে বাচ্চারা চড়ুইভাতি খেলে না, অনাহারে ক্লান্ত হয়ে মুখ হাঁ করে বাতাস গিলে। যেখানে ডানপিটে মেয়ের জন্য বাজার থেকে আলতা কিনে আনে না বাবারা, ক্ষুধা মেটানোর জন্য বজরায় চড়া বাবুদের কাছে তাকে বিক্রি করতে নিয়ে যায়। যেখানে সাধুরা সব চোর হয়ে গেছে। সেইসব গ্রামে বাঁশির সুর নেই, আহাজারি আছে। বুনো ফুলের সুবাস নেই, আছে গন্ধ লাশের। সেখানে জীবন আছে, আছে সংগ্রাম। সেখানেই কোথাও আছে জলেশ্বরী, যাকে খুঁজতে বেরিয়েছে কাজল।
[Source: Aranyamon Prokashoni]
Reviews
There are no reviews yet.