“যা লিখছি, তা কলকাতার ইতিহাস নয়। আজকাল কলকাতার ইতিহাস ব্যবচ্ছেদের খুব ধুম পড়েছে দেখি। প্রচলিত কাহিনিধারাই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখছেন কেউ কেউ। তার বাইরে যা যা পড়ছি, তার অধিকাংশই নির্ভরযোগ্য নয়। আমার এই গ্রন্থে কোনও নথিঘাঁটা তথ্য নেই। আছে শুধু এমন এক কলকাতার গল্প, যা আমার নিজের চোখে দেখা। তাই বা কম কী। সাতটা দশক পার করে দিলাম এই শহরে। জন্ম আমার এই শহরেই, হয়তো মৃত্যুও এখানেই হবে, যদি না হঠাৎ কোনও মোড় নেয় জীবনের গতি। এই কলকাতাতেই বেড়ে ওঠা, খেলাধুলো, সামান্য পড়াশোনা, কিছুদিন চাকরি, যদিও তার পুরো সময়টা এই শহরে নয়, তবু অনেকটাই। তারপর অখণ্ড অবসর। তাও এই চাকরির ফাঁকফোকর খুঁজে আর অবসরের বেশ খানিকটা অংশ নানারকম কাজে লাগিয়েছি সময়টাকে। কিছু লেখালিখি, কিছু মঞ্চে উঠে পায়চারি করা, কিছু ক্যামেরা কাঁধে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো, এই করেই তো কাটিয়ে দিলাম জীবনের সিংহভাগ। ইচ্ছে করে আমি কেমন দেখলাম কলকাতাকে, জানাই একটু মানুষজনকে। আমিও তো ছেলেবেলায় দাদুর কাছে, বা মায়ের কাছে, তাদের দেখা কলকাতার গল্প শুনতে ভালোবাসতাম। গল্পে আমি যতটা শুনেছি, তার অনেক বেশি বলতে পারব। তার কারণ আমি তো জন্ম থেকেই কলকাতায়। যেসব রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শেখার পর থেকেই চলাচল করেছি, সেসব পথে আজ হাঁটতে কত স্মৃতি ভিড় করে আসে। কলকাতা পালটে গেছে অনেকটাই, নিয়ত পালটাচ্ছে। তবু পথে যেতে যেতে মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়াই, আরে! এখানে এত ঝাঁ চকচকে একটা বাড়ি! এখানে দেববাবুর দোতলা বাড়িটা ছিল না! সেই গোলাপি রঙের, যার দোতলাতেও ছাগল ঘুরে বেড়াত, কাঠের রেলিঙেও উঠে পড়ত। দেখ কাণ্ড!
আসুন, সেই কলকাতার গল্প শোনাই, আমার দেখা কলকাতা। আমি বেশিরভাগ সময়েই দক্ষিণ কলকাতায় কাটিয়েছি। তবে উত্তর বা মধ্য কলকাতার স্মৃতিও অনেক। সবই ছবির মতন সামনে দিয়ে চলে যায়। দেখাই আসুন সেসব ছবি আপনাদের।”
[Source: Patra Bharati]
Reviews
There are no reviews yet.