একদিকে কার্জন, ফ্রেজার, রিজলি ত্রয়ী সঙ্গোপনে করে চলেছেন বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা, অন্যদিকে বঙ্গদেশ তথা ভারতবর্ষ নতুন প্রাণস্পন্দনে যেন জেগে উঠেছে— কখনও বিশ্বকবির ব্রহ্মচর্যাশ্রমে আদর্শবাদী শিক্ষকের অনুপ্রাণিত শিক্ষাদানে, কখনও-বা নিবেদিতা-ওকাকুরা-অরবিন্দ-বারীন্দ্রের বিপ্লব প্রয়াসে। স্বামী বিবেকানন্দের মৃত্যুর পর রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে নিবেদিতা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন স্বাদেশিকতার কর্মযজ্ঞে। ইংল্যান্ডে গিয়ে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় প্রচার করছেন প্রাচীন বেদান্ত দর্শনের মহিমা। জগদীশচন্দ্র, প্রফুল্লচন্দ্র এবং উপেন্দ্রকিশোর বিজ্ঞানের বিশুদ্ধ ও প্রায়োগিক চর্চায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। পদার্থবিজ্ঞানী জগদীশ ক্রমেই সরে আসছেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের জগতে। বোম্বেতে পসার জমাতে ব্যর্থ গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে নানাবিধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। বাংলার ‘জোন অফ আর্ক’ সরলা ঘোষাল ব্যস্ত আছেন বিভিন্ন উদ্দীপক কর্মকাণ্ডে। একের পর এক ঘনিষ্ঠজনের মৃত্যুশোক অতিক্রম করে অবিচলিত রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করে চলেছেন নতুন তালের গান, রচনা করছেন ‘নৌকাডুবি’র মতো জনচিত্তজয়ী উপন্যাস এবং ‘স্বদেশী সমাজ’-এর মতো মননশীল প্রবন্ধ। দুই জাপানি শিল্পী টাইকান এবং হিশিদার প্রেরণায় ছবি আঁকার জগতে যুগান্তর আনছেন অবনীন্দ্রনাথ। এই সময়ই শুরু হচ্ছে রুশ-জাপান যুদ্ধ যেখানে এশীয় দেশ জাপানের অনুপম বীরত্বে অনুপ্রাণিত হচ্ছে আপামর প্রাচ্যবাসী। কখনও দূর থেকে, কখনও কাছ থেকে ঐতিহাসিক সেই সময়কে প্রত্যক্ষ করছে সদ্য কৈশোরে উত্তীর্ণ প্রেমাঙ্কুর আতর্থী। তার জীবনে এই প্রথম প্রেমের সঞ্চার। ‘নতুন আলো’-র পরবর্তী পর্ব ‘সোনালি সকাল’। বাংলা রেনেসাঁস নিয়ে পরিকল্পিত সৌম্য ভট্টাচার্যের এই মহাকাব্যিক উপন্যাসের অন্ত ঊনবিংশ শতাব্দীর পুরোধা পুরুষ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাবসানে।
[Source: Ananda Publishers]






Reviews
There are no reviews yet.