কলেজে শুরু হয়েছে অ্যাডমিশনের মরশুম। ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের ভিড় অফিস ঘরে। সোমনাথ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল কলেজ ইউনিয়নের মাতব্বরদের সঙ্গে গলার শির ফুলিয়ে তর্ক করছে একটি মেয়ে, কেন দেব চাঁদা? জোরজুলুম নাকি? সোমনাথ এই কলেজের অধ্যাপক। ওকে দেখতে পেয়ে মেয়েটি সালিশি মানল। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু সোমনাথ প্রমাদ গুনল। সে কোনও ঝঞ্ঝাটে জড়িয়ে পড়ার মানুষই নয়। সবাইকে তুষ্ট করে চলাই তার স্বভাব। ঘরে কিংবা বাইরে সামান্যতম ঝামেলা দেখলেই তার স্নায়ু অবশ হয়ে আসে। এমন যে মানুষ, সে মেয়েটির হয়ে ইউনিয়নকে সামান্য অনুরোধ করে আগুনে হাত পুড়িয়ে ফেলল। অথচ মৃদুলা, মেয়ে মিতুল ও বিবাহিত মেয়ে তুতুলকে ঘিরে এক সুখস্বপ্নের সংসারে সোমনাথ জীবনযাপন করে। আতঙ্কের সুড়ঙ্গেই কেটে গেল যার সারাটা জীবন, তার মেয়ে মিতুল সুদূর গ্রামের এক অস্তিত্বহীন স্কুলে চাকরি পেল। সোমনাথ চায়নি মেয়ে ওইখানে চাকরিতে যাক। কিন্তু মিতুল চ্যালেঞ্জটা নিল। উপরন্তু বাবার মুখের ওপর বলল, কীসের ভয় বাবা? কার ভয়? সোমনাথ ভেবে পেল না, কোত্থেকে এত জোর পায় মিতুল? নীতিবোধের আড়ালে যে-ভয়ের চোরা স্রোতে ভাসত সোমনাথ, তার থেকে হঠাৎই বেরিয়ে এল সে। একদিন উদ্ধত এক ছাত্রনেতা অভিজিৎকে সপাটে মারল সোমনাথ। এই ঘটনায় সারা কলেজ তোলপাড়। অধ্যক্ষ নির্দেশ দিলেন অভিজিৎকে নিয়ে গণ্ডগোল পাকানোর জন্য লিখিত ক্ষমা চাইতে হবে সোমনাথকে। এই প্রথম সোমনাথ রাজি হল না। আপস না করে রুখে দাঁড়াল। শামুকের জীবন থেকে বেরিয়ে এল সোমনাথ। কিন্তু কোন আত্মশক্তিতে? কীসের ভরসায়?
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.