পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টির পিছনে থাকে একটা ইতিহাস। পুরীর জগৎ বিখ্যাত জগন্নাথদেবের মন্দিরের নেপথ্যেও রয়েছে এক নাটকীয় কাহিনী। রাজার আরাধ্য ঈশ্বর নীলমাধব এখানে জগন্নাথরূপে প্রকাশিত এবং প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু নীলমাধব কেন এলেন না? উপন্যাসের চাইতেও অধিক আকর্ষক জগন্নাথদেবের কাহিনী। ধ্রুপদী গদ্যের সাবলীল ভঙ্গিতে রচিত এই কাহিনী শুধু ঈশ্বরের মহিমা প্রচারে নয়, এখানে রয়েছে মানুষের কথা। ভক্তি, বিশ্বাস, প্রেম আর মানবতাবোধের উজ্জ্বল সাক্ষ্য রয়েছে এই গ্রন্থের পাতায়-পাতায়। ঈশ্বর এখানে সর্বজাতির, সর্বশ্রেণীর। ধর্মান্ধতা নয়, ঈশ্বর এক পবিত্ৰবোধ আর সহমর্মিতার অদৃশ্য সেতু। এখানে ব্রাহ্মণ আর শবর, অন্ত্যজ আর কায়স্থ সবাই হাত ধরাধরি করে দাঁড়াতে পারে, ভালবাসতে পারে পরস্পরকে। এই রুদ্ধশ্বাস কাহিনী মানুষে-মানুষে, জাতিতে জাতিতে মহামিলনের মহাগ্রন্থ। একাধিক রঙিন চিত্রে শোভিত বর্ণাঢ্য এই গ্রন্থ মানবতা আর মানুষের প্রতি বিশ্বাসে উদবোধিত হবার প্রেরণা। শবরকন্যার সঙ্গে ব্রাহ্মণ সন্তানের প্রেম আর পরিণয়ের মধ্যে দিয়ে প্রাচীন মানব সমাজের যে চিত্রটি ফুটে ওঠে সেখানে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় মানুষই। অহঙ্কার নয়, আত্মনিবেদন আর মানুষের প্রতি বিশ্বাসই ঈশ্বরকে পাবার একমাত্র পথ।
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.