সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়ার সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে অপযোগাযোগও ঘটছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ সন্ধানীরা নানাভাবে প্ররোচিত করছে মানুষকে। এরপর ব্যক্তির স্পর্শকাতর ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আবার কেউ কেউ প্রতিশোধপরায়ণ হয়েও প্রতিশোধ নেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জ্ঞানী-গুণীজনরা। দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার সম্পর্কে বলেছেন। মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গেইম ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অবশ্য, এর আগেও ধর্মীয় গুরুগণও এই বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কোনো কোনো বিশ্লেষক দাবি করছেন, আগামী ২০ বছরের মধ্যেই এর নেতিবাচক প্রভাবের সবচেয়ে খারাপ ফল পেতে হবে মানুষদের।
কালের কণ্ঠে ‘ফেসবুকে বিপদে’ সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই চট্টগ্রামের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অর্থাৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোনের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে এবং বিরূপ প্রভাব থেকে দূরে রাখার উদ্যোগ নিয়েছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশও স্মার্টফোন ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে একটি ভিডিওচিত্র ধারণ করে সেটি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রদর্শন ও স্মার্টফোন ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। সার্বিকভাবে এসব উদ্যোগ ইতিবাচক। তাই সংশ্লিষ্টরা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।
স্মার্টফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গেইম-এগুলোর সর্বাধিক ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। শুধু শিক্ষার্থীদের কথা বললে কম বলা হয়। পুরো সমাজ জীবনেই বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সমাজের প্রায় সব পেশার মানুষই এসবের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়েছেন। এটা প্রমাণিত সত্য। তাই শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উচিত সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে ভার্চুয়াল জগতের বাসিন্দা হওয়া। তা না হলে অনাগত ভবিষ্যতে আরও বেশি সামাজিক ক্ষয়িষ্ণুতার শিকার হতে হবে আমাদের সবাইকে। এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশ-কেউ বাদ যাবে না।
[Source: Kotha Prokash]






Reviews
There are no reviews yet.