শুধুই আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর স্ত্রী নয়, তার বাইরেও যে ‘লেডি’ অবলা বসুর এক বিশিষ্ট আত্মপরিচয় ছিল তা খেয়াল রাখেনি আজকের বাঙালি। দেড়শো বছর আগে যখন এদেশে মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়াটাই বিরল ঘটনা, কলকাতা থেকে ডাক্তারি পড়তে মাদ্রাজে গিয়েছিলেন তিনি। প্রথম বাঙালি মহিলা হিসেবে পাশ করেছিলেন ফার্স্ট এল এম এস (লাইসেন্সিয়েট অফ মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্স। তাঁর পরিচালনায় অবিভক্ত বাংলায় অন্যতম সেরা বিদ্যালয়ে পরিণত হয় ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলার শহরে ও গ্রামেগঞ্জে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারের জন্য নারী শিক্ষা সমিতি, দুঃস্থ ও বিধবা মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য বিদ্যাসাগর বাণীভবন। অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছিল বহু শিক্ষাকেন্দ্র তাঁর সক্রিয় উদ্যোগে। তৎকালীন বাঙালি সমাজের সর্বাপেক্ষা মননশীল গোষ্ঠী সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ তাঁকে বরণ করেছিল প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট পদে। আত্মভোলা বিজ্ঞানসাধক জগদীশচন্দ্রের ‘গৃহলক্ষ্মী’ এই নারী ছিলেন একাধারে ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালির নবজাগরণ ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশও। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জেঠতুতো দিদি, রবীন্দ্রনাথের আরেক ‘বৌঠান’ সেই মহীয়সী নারীর জীবনকথা আঁকা হল বাঙালি জনমানসের সোনালি পর্বটির প্রেক্ষাপটে।
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.