‘উড়ো খই’ বিমল কর-এর আত্মজীবনী নয়, স্মৃতিকথা। এই স্মৃতিকাহিনীর প্রথম পর্ব যেখানে শেষ হয়েছিল, লেখক সেখানে সদ্য যুবক। সাহিত্যজগতেও নবাগত। জীবনের এই পর্বটিকে অনিশ্চিত অপরিণত সাধারণ একটি মানুষের স্মৃতিচয়ন বলা যেতে পারে। ‘উড়ো খই’-এর দ্বিতীয় পর্বের শুরু ১৯৫৪-৫৫ সাল থেকে। বয়সে লেখক তখন কিঞ্চিৎ পরিণত, সাংসারিক জীবনে দায়বদ্ধ, কর্মজীবনেও মোটামুটি স্থিতি লাভ করেছেন। তবু কি তিনি নিশ্চিন্ত? কিংবা তৃপ্ত? সম্ভবত কোনওটাই নয়। স্পষ্টত না হলেও এই সময় থেকেই বিমল কর ক্রমশ, কখনও সচেতনভাবে কখনও অবচেতন মনে, মাঝেমধ্যেই কোনও-না-কোনও প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে অস্থিরতা বোধ করেছেন। এইসব প্রশ্নই সম্ভবত তাঁর আত্ম-অনুসন্ধানের প্রয়াস। ফলে, বিমর্ষ, আত্মমগ্ন স্বভাবের এই মানুষটির লেখক-জীবনেরও আরেকটি অধ্যায়ের সূচনার কথা এই পর্বে। এরই পাশাপাশি, বহমান সেই জীবনেরও কথা যা নানান স্বাভাবিক সুখ-আনন্দ শোক-দুঃখের অভিজ্ঞতায় পূর্ণ।মোটামুটিভাবে তিরিশ বছরের স্মৃতিকথা এই দ্বিতীয় পর্বে। সেই সময়কার সামাজিক পরিবেশ, সাহিত্যজগৎ, পত্রিকা সম্পাদনা, তরুণ লেখকদের সঙ্গে মেলামেশা, কলেজ স্ট্রীটের পুরনো পরিমণ্ডল—এমন অজস্র বর্ণবহুল চিত্র এই স্মৃতিসংগ্রহের অমূল্য সম্পদ। সব মিলিয়ে মিগ্ধ এক জীবনকাহিনীর মতোই আদ্যন্ত আকর্ষক এই গ্রন্থ।
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.