Summary Of Rabijibani 5
‘একজন অমৃতপুত্রকে আমরা তখনই আবার সহজভাবে তাঁর মর্ত্য-রূপে ভাবতে পারি, যখন সময়ের ব্যবধানে অনেক অবান্তর সঞ্চয় ঝ’রে পড়ে, আবার সমস্ত তথ্য প্রকাশিত হবারও বাধা থাকে না। রবীন্দ্রনাথকে তাই অপেক্ষা করতে হবে হয়তো দীর্ঘকাল—অন্তত যতদিন না ‘রবীন্দ্রজীবনী’ পরিবর্ধিত হবার পরেও নতুনতর তথ্য নিয়ে অনুরূপ গ্রন্থ আরও বেরোয়।’— চল্লিশ বছর আগে সেই-যে লিখেছিলেন বুদ্ধদেব বসু, সেই অপেক্ষারই যেন যোগ্য অবসান ঘটালেন প্রশান্তকুমার পাল তাঁর ‘রবিজীবনী’ গ্রন্থে। নতুনতর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, নবতর তথ্যের মিশেল ঘটিয়ে, যুক্তিসিদ্ধভাবে যাবতীয় তথ্যকে যাচাই করে, একটির-পর-একটি খণ্ডে তিনি তুলে ধরে চলেছেন এ-যাবৎ অনাবিষ্কৃত এক মর্ত্য-রূপী রবীন্দ্রনাথকে। উচ্ছ্বাসের বাষ্পে অস্পষ্ট নয় সেই মূর্তি, কবিকৃত ভাষ্যে খণ্ডিত নয় তার স্বরূপ। ‘রবিজীবনী’র এই পঞ্চম খণ্ডের উপজীব্য ১৩০৮ থেকে ১৩১৪ বঙ্গাব্দ। অর্থাৎ রবীন্দ্র-জীবনের একচল্লিশ থেকে সাতচল্লিশ বৎসর পর্যন্ত সাতটি বছরের আনুপুঙ্খিক বিবরণ এই খণ্ডে। কবির ব্যক্তিজীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন—উভয় দিক থেকেই অত্যন্ত ঘটনাবহুল এই সময়। একদিকে গঠনমূলক কর্মসূচীর ব্যাপ্ত, বিস্তৃত ক্ষেত্রে নিজেকে সংলগ্ন করছেন রবীন্দ্রনাথ, অন্যদিকে ব্যক্তিজীবনে প্রত্যক্ষ করছেন প্রিয়জনবিচ্ছেদের ধারাবাহিক বিপর্যয়। বঙ্গদর্শন-সম্পাদনা, ব্রহ্মচর্যাশ্রম স্থাপন, স্বদেশী সমাজের পরিকল্পনা, বঙ্গভঙ্গ ও জাতীয় শিক্ষার আন্দোলন, পল্লীসংগঠনে ব্যক্তিগত প্রয়াসের সঙ্গে পাবনা প্রাদেশিক সম্মেলনের সভাপতির আসন থেকে এই কর্মে সকলকে আহ্বান—সব দিক থেকেই তাঁর লক্ষ্য, ‘আত্মশক্তি’র উদ্বোধন। আবার এই সময়েই ঘটেছে প্রিয়জনবিয়োগের পরম্পরা। প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্র নীতীন্দ্রনাথের মৃত্যু দিয়ে এই প্রয়াণপর্বের সূচনা। পরপর স্ত্রী, কন্যা, পিতা ও কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে সেই পর্বের অবসান। রাষ্ট্রীয় আন্দোলন তার অভীষ্ট পথে অগ্রসর হয়নি, ব্যক্তিজীবনের কাঠামোটিও ক্রমান্বয় শোকের আঘাতে বিপর্যস্ত। রবীন্দ্রনাথ তাই বহির্জীবন থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে অন্তরের মধ্যে ব্যাপৃত হলেন আত্মশক্তির বোধনে। পরবর্তী খণ্ডে, গীতাঞ্জলি’ পর্বে, সেই সাধনাকে প্রত্যক্ষ করব আমরা।
Browse and Read other parts of Rabijibani (রাবিজীবনী ৪) by at Spectrashop
To know more updates on books around the world click on www.spectralhues.com






Reviews
There are no reviews yet.